প্রবাস বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকম নিউজ ডেস্ক :: তারা আসেন, দেখেন, দীর্ঘ সময় ধরে ছড়ি ঘোরান, অতঃপর মধু পিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে তুলতে চলে যান। বিদায়বেলায় ফুলের তোড়া গ্রহণের সময় দিয়ে যান কিছু ছবক, নসিহত। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এই ‘মধুকর’গণ আর কেউ নন- ডেপুটেশনে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ। একজন বিদায় নেন তো ৩ জন এসে দখল নেন চেয়ার। যেসব চেয়ারের আইনগত হকদার কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তারা। তাদের হতাশ করে প্রেষণে এনে যুক্ত করা হয় দুদকের আইন, বিধিবিধান, অনুসন্ধান-তদন্তের ধরন, বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণাহীন কিছু আমলাকে। জন্মলগ্ন থেকেই প্রতিষ্ঠানকে অক্টোপাসের মতো গিলে রেখেছে আমলাতন্ত্র। কমিশন গঠন হওয়ার এটিকে যেমন কার্যকর হওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম বাধাটি সৃষ্টি করেছিল আমলাতন্ত্র, তেমনি পরবর্তী সময়গুলোতেও আমলাতন্ত্রের গহ্বর থেকে বেরোতে পারেনি প্রতিষ্ঠাটি। যে কারণে দুর্নীতি দমনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে জন্ম নেয়া দুদকের সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লাই এখন ভারী। আমলানির্ভর কোনো কমিশনই যেমন সাফল্য দেখাতে পারেনি, দুদকও পারেনি। ক্রমবর্ধিষ্ণু দুর্নীতির বাস্তবতায় এ প্রতিষ্ঠানের ধারণাসূচক কেবলই নিম্নগতির। জনমানুষের প্রত্যাশার ক্ষেত্রেও সৃষ্টি করছে হতাশা। দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের রেখে চুনোপুঁটি নিয়ে দশক দশক ব্যস্ত থাকাই হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটির ঐহিত্য। অনুসন্ধান ও তদন্তের নামে নিরীহদের হয়রানি, বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি, প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের দায়মুক্তি এবং সর্বোপরি প্রশাসন ক্যাডারকে সুরক্ষা নিশ্চিত করাই হয়ে উঠেছে দুদকের প্রধান এজেন্ডা। সাম্প্রতিক সময়ের কিছু দৃষ্টান্ত টানলে বিষয়টি পরিষ্কার হতে পারে।
দুদকের চেয়ারম্যান হয়ে এসেছিলেন ‘দুর্নীতিতে জিরো-টলারেন্স’ খ্যাত জাঁদরেল আমলা ইকবাল মাহমুদ। দৃষ্টান্তমূলক দুর্নীতি দমন নয়। হম্বিতম্বিই ছিল যার অস্তিত্ব জানান দেয়ার কৌশল। তিনি এসেই কমিশনের কর্মকর্তাদের একচোট নিলেন। হাস্যকর কারণে গণহারে তাদের শোকজ শুরু করলেন। কোনো ধরনের কর্ম-অভিজ্ঞতা না নিয়ে কমিশনের বেশ ক’জন কর্মকর্তাকে ডেপুটেশনে অন্যত্র পাঠিয়ে দেন, যা কমিশনের আইনে নেই, বিধিতে নেই এমনকি নজিরও নেই। কথায় কথায় কর্মকর্তাদের শাস্তি দিতেন। পদোন্নতির প্রশ্নে আরোপ করলেন মনগড়া পরীক্ষা-পদ্ধতি। পদোন্নতি যেকোনো প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর ন্যায়সঙ্গত প্রত্যাশা। কিন্তু ইকবাল মাহমুদ স্বাভাবিক পদোন্নতি না দিয়ে জনপ্রশাসন থেকে চেয়ে নিয়ে এলেন বেশ কিছু আমলা। ‘পরিচালক’ পদবি দিয়ে তাদের বসিয়ে দিলেন কমিশনের অভিজ্ঞ ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের মাথার ওপর। এর ফলে দুদকের সৎ ও যোগ্য কর্মকর্তারা বঞ্চিত হলেন। বঞ্চনার সেই ক্ষত আজও বয়ে চলেছেন বেশ ক’জন সিনিয়র কর্মকর্তা। যেসব উপ-পরিচালক পরিচালক পদের যোগ্য তাদের পরিচালক করেননি। যেসব পরিচালক মহাপরিচালক হওয়ার যোগ্য তাদের মহাপরিচালক করেননি। এসব পদে প্রেষণে এনে বসিয়ে দিলেন কিছু অ্যাডমিন ক্যাডারের কর্মকর্তা। এর ফলে কমিশন কর্মকর্তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় অসন্তোষ। দেখা দেয় প্রশাসন-কমিশন কর্মকর্তাদের মাঝে বিভাজন। তিনজনের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হলেও ইকবাল মাহমুদ আরেকজন খয়ের খাঁ আমলাকে সঙ্গে নিয়ে কমিশনে প্রতিষ্ঠা করেন একক কর্তৃত্ব। দুদকের ধারণাগত বৈশিষ্ট্যের বাইরে গিয়ে কার্যক্রম চালালেন মনগড়া পদ্ধতিতে। সব কর্মকর্তাকে সাদা শার্ট পরতে বাধ্য করলেন। দুর্নীতি দমনের পরিবর্তে ‘প্রতিরোধ’কেই প্রধান কাজ হিসেবে বেছে নিলেন। জেলায় জেলায় গণশুনানি, মানববন্ধন, ফাঁদ মামলা, দুর্নীতিপ্রবণ সেক্টরে ‘দুর্নীতির কারণ’ চিহ্নিত করে এর ওপর প্রতিবেধন দাখিল করতে লাগলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। যদি কমিশনের প্রধান কাজ দুর্নীতি দমন। তার সময়ে কমিশনের আইনগত ক্ষমতা খর্ব হয়। এ সময় ব্যাংক লুট, অর্থপাচার এবং স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি লাগামহীন হয়ে ওঠে। দুর্নীতিগ্রস্তদের দায়মুক্তির ঘটনাও বেশি ঘটে। মেয়াদান্তে তার বিদায়ের শেষ ৬ মাস এত সংখ্যক দায়মুক্তি প্রদানের ঘটনা ঘটে যে, এ বিষয়ে হাইকোর্ট স্যুয়োমোটো রুল জারি করে। পরে নিষ্পত্তি করে দেয়া অন্তত পৌনে ৭শ’ ফাইল পুনঃঅনুসন্ধান ও পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। পরবর্তীতে দায়মুক্তি দেয়া অনেক নথি মামলায় পর্যবসিত হয়েছে, ফাইনাল রিপোর্ট থেকে চার্জশিট হয়েছে। এখনো চলমান রয়েছে সেই পুনঃতদন্ত, পুনঃঅনুসন্ধান। এ সময় দুদকে আমলাদের প্রভাব এতটাই বেড়ে যায় যে, বড় দুর্নীতিবাজ আমলাদের বিরুদ্ধে তিনি কোনো অনুসন্ধানই করতে দেননি। এমনকি দুদকে কর্মকর্তা বেশ ক’জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তিনি কেবল এনামুল বাছিরের মতো নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাকে ‘দুর্নীতিবাজ’ সাব্যস্ত করে বাহবা লোটেন।
স্টান্টবাজি ছিল ইকবাল মাহমুদের প্রিয় বিষয়। দুর্নীতি দমন রেখে তিনি কখনো নেমে যেতেন ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণে। কখনো নিজ কন্যাকে অফিসে ঢুকতে না দেয়ার নাটক সাজিয়ে নিজেকে ‘ভালো প্রশাসক’ সাজার চেষ্টা করতেন। অথচ এনামুল বাছির-ডিআইজি মিজানের ফোনআলাপে ‘দয়াছ’ নামক ব্যক্তির সঙ্গে ইকবাল মাহমুদের ঘনিষ্ঠতা বেরিয়ে এলেও এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয় ইকবাল মাহমুদ এবং দয়াছ প্রসঙ্গকে চাপা দিয়ে। তার পূর্ববর্তী কমিশন খাদ্যে নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলায় চার্জশিট দিয়ে গেলেও সেটি তিনি ‘রি-কল’ করেন। একজন নারী কর্মকর্তাকে বাঁচাতে তিনি এটি পুনঃতদন্তে পাঠান। সেই তদন্ত করতে গিয়ে তিনি একটি ‘ফোনালাপ’ আবিষ্কার করেন। সেই ফোনালাপে তৎকালীন কমিশনার (তদন্ত) মো. সাহাবুদ্দিনের (বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট) প্রসঙ্গত টেনে তার গায়েও দুর্নীতির তকমা লাগানোর চেষ্টা করেন। যদিও ইকবাল মাহমুদ নিজেই পরে ‘বেগম পাড়ার সাহেব’ বলে পরিগণিত হন। কানাডায় তার অর্থপাচার, সেকেন্ডে হোম, স্বাস্থ্যের ডন মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু এবং আবজালকে আশ্রয়-প্রশ্রয় প্রদান, রাজধানীতে নামে-বেনামে একাধিক বাড়ি, প্লট ও ফ্ল্যাটের সন্ধান মেলে। তার মেয়াদকালজুড়ে প্রতাপশালী আমলা-মহাপরিচালক (বিশেষ) ছিলেন সাঈদ মাহবুব খান। বিরুদ্ধে রয়েছে বিপুল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালক, প্রকৌশলী, ডাক্তার, পদস্থ কর্মকর্তার অর্থ পাচারকারী রাঘব বোয়ালদের দায়মুক্তি প্রদানের অভিযোগ। কর্মকালীন ৫ বছরে তার বিষয়ে অভিযোগের পাহাড় জমা হলেও সাঈদ মাহবুবের বিরুদ্ধে কমিশন কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। প্রাইজ পোস্টিং নিয়ে তিনি ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট চলে যান সরকারের অন্য একটি দফতরে। ইকবাল মাহমুদের আমলে প্রেষণে আসা আরেক যুগ্ম সচিব ছিলেন এ কে এম সোহেল। তিনি ছিলেন আইসিটি ও প্রশিক্ষণ বিভাগের মহাপরিচালক। প্রশিক্ষণের নামে বিপুল অর্থ ব্যয়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া করোনা মহামারি চলাকালীন দুই বছরও দুর্নীতি প্রতিরোধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বরাদ্দকৃত ৪০ কোটি টাকার বেশি অর্থ তিনি ‘ব্যয়’ দেখিয়েছেন। দুদকে কাজ করলেও তিনি ‘কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন’র মার্কেটিংয়ের কাজ করতেন। অধীনস্থ অনেক দুদক কর্মকর্তাকে তিনি ওই কর্মকর্তার ব্যক্তিগত টাকা খরচ করে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে কোর্স করাতে বাধ্য করেন। এছাড়া দুদক থেকে দেয়া গাড়িটি ব্যবহার করতেন সোহেলের কলেজশিক্ষক স্ত্রী। এ কে এম সোহেল দুদকের অভিযোগ যাচাই-বাছাই (যাবাক)-এর দায়িত্বেও ছিলেন। এ সময় তিনি ‘ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটি’র প্ররোচনায় ১১৬ আলেমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালান। পক্ষান্তরে অনেক রাঘ বোয়ালের দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তি দেন অভিযোগ বাছাই পর্যায় থেকে। এ জন্য কমিশনের কাছে তাকে কোনো জবাবদিহি করতে হয়নি। বরং বিতর্কিত এই যুগ্ম-সচিব এ কে এম সোহেলকে ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রাইজ পোস্টিং দেয়া হয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে।
দুদকে আমলা আধিপত্য ধরে রাখতে ২০২১ সালে সংস্থাটির সচিব হিসেবে গ্রহণ করে বিতর্কিত এক আমলা মো. মাহবুব হোসেনকে। যিনি বহুল আলোচিত ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন প্রকল্প-২’র প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮০টি গৃহহীন পরিবারের মাঝে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত দুই কক্ষের বাড়ি উপহার দেয়া হয়। বাড়ি পেয়ে ভূমিহীনরা অত্যন্ত খুশি হলেও কিছুদিন যেতেই অনেক বাড়ির দেয়াল ও মেঝে ধসে পড়ে। তখন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ওই দুর্নীতি নিয়ে দুদকের তদন্ত করার কথা। সেটি না করে প্রকল্প পরিচালক মাহবুব হোসেনকে দুদক সচিব হিসেবে বেছে নেয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুর্নীতি প্রসঙ্গটাই ধামাচাপা দেয় দুদক। দুই দুদক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে চলতি বছর ৮ ফেব্রুয়ারি মাহবুব হোসেনকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে প্রাইজ পোস্টিং দেয়া হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ১৬(১) ধারার ব্যত্যয় ঘটিয়ে দুদক সচিব হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নিয়োগ দিয়ে পাঠায় খোরশেদা ইয়াসমীনকে। আইনে কমিশন কর্তৃক সচিব নিযুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও তাকে নিয়োগ দেয় সরকার। অথচ কমিশন তাকে বিনা বাক্য ব্যয়ে গ্রহণ করে।
দুর্নীতি দমন কমিশন যেন প্রশাসন ক্যাডারদের জন্য এক মধুর চাক। সাধারণত একটি পদে প্রশাসন ক্যাডারের কেউ ৩ বছরের বেশি থাকতে পারে না। কিন্তু দুদকে কেউ একবার পোস্টিং পেলে সেটি ছাড়তে চান না।
দুদক মহাপরিচালক হিসেবে টানা ৫ বছর কর্মরত ছিলেন যুগ্ম-সচিব জাকির হোসেন। তিনি দুদকে অভিযোগ যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত (যাবাক) কমিটির প্রধান ছিলেন। পরিচালক হিসেবে সহায়ক ছিলেন আরেক আমলা (উপ-সচিব) উত্তম কুমার মণ্ডল। উভয়ে মিলে অনেক রাঘব বোয়ালদের নথি বাছাই পর্বেই ধামাচাপা দিয়েছেনÑ মর্মে এন্তার অভিযোগ ছিল। এ বিষয়ে কমিশনকে কখনোই গা করতে দেখা যায়নি। বরং দুদকে থাকতেই অতিরিক্ত সচিব হিসেবে তার পদোন্নতি হয়। সর্বশেষ গত ১৮ মার্চ রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে প্রাইজপোস্টিং নিয়ে বদলি হয়ে যান। রাজউকের অবসরপ্রাপ্ত সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) ছিলেন তৎকালীন উপ-সচিব রেজাউল করিম তরফদার। ২০১৯ সালে বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয় দুদকে। ওই মামলায় অনেকের সঙ্গে আসামি ছিলেন রেজাউল করিম তরফদার। মামলাটির তদন্ত শুরু না হতেই দুদকে মহাপরিচালক (অনুসন্ধান) হয়ে আসেন যুগ্ম-সচিব রেজানুর রমান। যিনি একাধারে রেজাউল করিম তরফদারের সাক্ষাৎ জামাতা। পরে বনানীর বোরাক রিয়েল এস্টেট নির্মিত ‘হোটেল শেরাটন’র নিয়ে দুদকে একটি অনুসন্ধান শুরু হয়। ওই অনুসন্ধানে সাবেক রাজউকে কর্মকর্তা রেজাউল করিম তরফদারের নাম উঠে আসে। রেজানুর কমিশনে তদবির করে ওই অনুসন্ধান থেকে শ্বশুরের নাম কাটান।
হাইকোর্টের নির্দেশে সরকারদলীয় এমপি আব্দুস সালাম মোর্শেদীর গুলশানে সরকারি বাড়ি দখলের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, সালাম মুর্শেদীর অনুকূলে সরকারি সম্পত্তি বরাদ্দের ক্ষেত্রে ব্যাপক জাল-জালিয়াতি হয়েছে। ওই জালিয়াতির অন্যতম হোতা তৎকালীন রাজউক চেয়ারম্যানসহ রেজাউল করিম তরফদার। নথিগুলোতে রেজাউল করিমের একাধিক স্বাক্ষর রয়েছে। অথচ সালাম মোর্শেদীর বিরুদ্ধে যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে তাতে রেজাউল করিম তরফদারকে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে। সবই হয়েছে জামাতা রেজানুর রহমানে কল্যাণে। শ্বশুরের দুর্নীতি পাহারা দিতে জামাতা। তার এসব কর্মকাণ্ডের জন্য যেখানে দুদকের অনুসন্ধানের মুখোমুখি হওয়ার কথা, সেটি না হয়ে বরং হয়েছে প্রাইজপোস্টিং। দুদক থেকে তাকে প্রত্যাহার করে তাকে দেয়া হয়েছে প্রাইজ পোস্টিং। গত ২ এপ্রিল তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পদে।
এভাবে দুদকে প্রেষণে এসে কোনো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা স্বয়ং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেলেও কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয় না। বরং নিরাপদ প্রস্থানের জন্য তার পদোন্নতি এবং প্রাইজ পোস্টিংয়ের ব্যবস্থা করে।