প্রবাস বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকম নিউজ ডেস্ক :: ইংল্যান্ডে কুলসুমা আক্তার শিউলীকে হত্যাকারী স্বামী হাবিবুর রহমান মাসুম আটক হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তাকে বাকিংহামশায়ারের আইলসবারী এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। খবরটি নিশ্চিত করেছেন ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ার পুলিশের ডিটেক্টিভ চিফ ইন্সপেক্টর স্টেসি এটকিনসন।
হাবিবুর মাসুমকে সহায়তা করার জন্য ২৩ বছর বয়সী আরেক যুবককে গতকাল (৮ এপ্রিল) চেশায়ার থেকে আটক করা হয়েছে। তবে আটক ব্যক্তি হত্যার আগে নাকি হত্যার পরে পালানোর বিষয়ে সহায়তা করেছিলেন সেটা জানা যায়নি। আটক ব্যক্তির সাথে পলাতক মাসুমের সম্পর্কের বিষয়টি জানা যায়নি।

স্ত্রীকে হত্যার পর গত ২ দিন হাবিবুর মাসুমকে ধরার জন্য সারাদেশে হুলিয়া জারি করে ব্রিটিশ পুলিশ। হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে পুলিশ। সেখানে দেখা যায় সে একটি বাস স্টপ ধরে হেঁটে যাচ্ছে।

পুলিশ জানায়, শনিবার বিকাল ৩টা ২১ মিনিটে ব্রাডফোর্ড ওয়েস্টগেট এলাকায় ছুরিকাঘাত করে পালায় মাসুম। এরপর সাড়ে ৩টায় সিসিটিভিতে দেখা যায় সে মার্কেট স্ট্রিটের দিকে বাসে করে যাচ্ছে। সেখান থেকে ১২ মিনিট পরে নেমে যায় কিলিংহাল রোডে। ৩টা ৪২ মিনিটে বাসে থেকে নেমে ব্রাডফোর্ড মুর পার্কের দিকে হাঁটতে থাকে। এরপরই যেনো হাওয়ায় মিলিয়ে যায় মাসুম।

গত ২ দিনে সারাদেশে হুলিয়া জারিসহ এয়ারপোর্ট ও স্থলবন্দরের এলার্ট জারি করে স্থানীয় পুলিশ। মাসুম যে এলাকায় থাকতো সেই এলাকা বার্নলীর দুটি প্রপার্টিতে অভিযান চালায় পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানায়, ওই দিন বান্ধবী ও পাঁচ মাস বয়সী সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটা করতে বের হয়েছিলেন শিউলী। এসময় হাবিবুর মাসুম একটি দোকানের সামনে শিউলীর ঘাড়ে ‘চার থেকে পাঁচবার’ ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। তবে শিশুটির কোনো ক্ষতি হয়নি।

দোকানের মালিক জিও খান (৬৯) বলেন, তিনি শিউলীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। শিউলী তার দোকানের নিয়মিত ক্রেতা ছিলেন।

এসময় একজন চিকিৎসক গাড়িতে করে ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনিও সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। এরপর পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সের কর্মীরা শিউলীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

শিউলীর ভাই আকতার হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মাস তিনেক আগে একদিন রাতে সন্তানের কান্নায় বিরক্ত হয়ে তার গলা চেপে ধরেন হাবিবুর। তখন সন্তানকে বাঁচাতে গেলে স্ত্রীকে মারধর করেন তিনি। শিউলী এ ঘটনা ভাইদের জানালে পরদিন সকালে হাবিবুর ছুরি নিয়ে তাকে মারতে যান। নিজেকে বাঁচাতে বাথরুমে আশ্রয় নেন শিউলি। সেখান থেকে ভাবিকে ফোন দিয়ে পরিস্থিতি জানান। তার ভাবি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানান।

আকতার হোসেন আরও বলেন, পুলিশ এসে হাবিবুরকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এ শহরে আর বাস করতে পারবেন না, এই শর্তে জামিনে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু আবারও শিউলীর বাসার দরজায় নক করেন। বিষয়টি পুলিশকে জানালে নিরাপত্তার কারণে তাদের পার্শ্ববর্তী শহর ব্রাডফোর্ডে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু সেখানেই শিউলীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন তিনি।

হাবিবুর বেডফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরের ছাত্র। দুই বছর আগে উচ্চশিক্ষার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে আসেন। পরে তাদের এক সন্তানের জন্ম হয়। তখন তারা ওল্ডহাম শহরে বাস করতেন। তাদের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here