ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা। তুরস্কের উপকূলীয় ইজমির প্রদেশে ৩০ অক্টোবর
ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার তৎপরতা। তুরস্কের উপকূলীয় ইজমির প্রদেশে ৩০ অক্টোবর ছবি: রয়টার্স

শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে তুরস্ক ও গ্রিসে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন চার শতাধিক। রিখটার স্কেলে সাত মাত্রার ওই ভূমিকম্প শুক্রবার অ্যাজিয়ান সাগরে আঘাত হানে। রয়টার্স ও এএফপির খবরে এসব তথ্য জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলেছে, ভূমিকম্পের শক্তি ছিল রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার। তবে তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (এএফএডি) বলেছে, গ্রিনিচ সময় ১১টা ৫০ মিনিটে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৬।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেছেন, ভূমিকম্পে ইজমির প্রদেশের ইজমির শহরে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের পরপরই সড়কে হাজার হাজার মানুষ নেমে আসেন।

তুরস্ক ও গ্রিসের কর্তৃপক্ষ বলেছে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলও ভূকম্পনে কেঁপে উঠেছে। গ্রিসের সামোস দ্বীপেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এই দ্বীপে উঁচু ঢেউ আঘাত হানতে পারে জানিয়ে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।

ভূমিকম্পে ইজমির প্রদেশের ইজমির শহরে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে

ভূমিকম্পে ইজমির প্রদেশের ইজমির শহরে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে ছবি: রয়টার্স

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, তুরস্কের এএফএডি বলেছে, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪১৯ জন।

তুরস্কের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইজমির শহরে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। এসব ধ্বংসস্তূপে মানুষ আটকা পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আশপাশের আরও কয়েকটি প্রদেশেও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ইজমির শহরের মেয়র তুঙ্ক সয়ের বলেছেন, এই প্রদেশে প্রায় ২০টি ভবন ধসে পড়েছে। আর ইজমির প্রদেশের গভর্নর বলেছেন, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৭০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ইজমিরে চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী ইল্কে সিদে বলেন, ‘এই এলাকায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। কাজেই আমি প্রথমে বিষয়টিকে পাত্তা দিইনি। কিন্তু সাগরে ঢেউ উঠতে শুরু করলে ভয় পেয়ে যাই।’ তিনি জানান, ভূমিকম্পটি ২৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল।

গ্রিসের সামোস দ্বীপে ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে গাড়ি

গ্রিসের সামোস দ্বীপে ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে গাড়ি ছবি: এএফপি

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে তুরস্ক বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। ১৯৯৯ সালের আগস্টে ইস্তাম্বুলের দক্ষিণ-পূর্বে ইজমিত শহরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের আঘাতে ১৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১১ সালে পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভানে ভূমিকম্পের আঘাতে পাঁচ শতাধিক মানুষ মারা যায়।

ইজমির প্রদেশের সেফেরিহিসার শহরের মেয়র ইসমাইল ইয়েতিস্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনটিভিকে বলেন, ‘ভূমিকম্পের পর সাগর যেন ফুলে উঠেছে। ছোট আকারের সুনামির মতো মনে হচ্ছে।’

এদিকে গ্রিসের সামোস দ্বীপের বাসিন্দাদের উপকূলীয় এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে দেশটির স্কাই টিভিকে বলেছেন গ্রিসের অ্যান্টি-সিসমিক প্ল্যানিং সংস্থার প্রধান এফতিমিওস লেক্কাস। তিনি বলেন, অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকম্প এটি। এই দ্বীপে দুজন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন বলে গ্রিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here