বিশ্বের যত দেশে আছে
কোথাও আজ স্বস্তি নেই,
শান্তি নেই, বিচার নেই,
যুদ্ধ বিবাদ লেগেই আছে,
সন্ত্রাসী ও আগ্রাসনে ছেয়ে গেছে ।
এই দুনিয়ায় আজ কি ঘটছে,
শুধু-ই-কি যুদ্ধ আর যুদ্ধ হবে ?
প্রতিহিংসার আগ জ্বলছে চারিদিকে,
মরছে অসহায় মানুষগুলো ।
শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে –
বিশ্ব মানব আজ শঙ্কিত
চারিদিকে ভয়ার্ত মানুষের ক্রন্দন,
হাজারো মানুষের হাহাকার শুনি ।
সবার মনে এক-ই প্রশ্ন
আমরা কি একটু শান্তি পাব না ?
জাতিতে জাতিতে বাড়ছে প্রতিহিংসা,
যতই ভাবি কি হচ্ছে,
ততই মোরা হতবাক হই ।
যুদ্ধ প্রতিরোধের শক্তি নেই,
সাহস নেই, অস্ত্র নেই,
তাই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে
সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের প্রতিবাদ
আর আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত
বিশ্ব মানুষের শান্তি কামনা ছাড়া
আমরা কি-ই-বা করতে পারি ।
বিশ্ব জনমত উপেক্ষা করে
ইরাকের উপর হামলা
বিশ্ববাসী মেনে নিতে পারে নাই ।
রাজার মিথ্যাচার, জনগণকে ধোকা দিয়ে
রক্তের হোলিখেলা খেলছে তারা ।
সন্ত্রাস নির্মূলের নামে –
গণহত্যা, খুন, দেশ দখল
এ অধিকার কে দিয়েছে তাদের !
জাতিসংঘ দেয়নি মানুষ মারা লাইসেন্স,
তাহলে ইরাকের উপর হামলা হলো কেন !
কে জবাব দেবে বলো !
কে বলবে এ ষড়যন্ত্র নয়, মিথ্যাচার নয়,
সাম্রাজ্যবাদ সম্প্রসারণের চক্রান্ত নয়,
তা’তো মোরা মেনে নিতে পারি না ।
এক এক দেশ করে আর কত দেশ
জাতিকে গ্রাস করতে চাও,
নির্মূল করতে চাও ?
আমাদের জানিয়ে দাও,
আশির দশকে ইরান হলো বিরান,
কত মুসলমান হলো শহীদ ।
নব্বইতে ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ,
তারপর চেচনিয়া, বসনিয়ায়
হাজারো মুসলমান হল বর্বরতার শিকার ।
কত মানুষ আত্মাহুতি দিল
সেপ্টেম্বর ২০০১আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলা,
এক বর্বর নৃশংসতার সারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে ।
নিঃসন্দেহে তা নিন্দনীয় ।
তাই বলে কি আফগানিস্তানে কার্পেট বোমিং করে
নিরিহ মানুষকে মারতে হবে ।
এ কেমন বিচার ? অবিচার নয়তো কি ?
আফগানিস্তানের মাটিতে রক্তের দাগ,
শুকাতে না শুকাতেই আরেকবার,
ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ।
জাতিসংঘ নীরব দর্শকের ভূমিকায়,
বিশ্ববাসী হতবাক হয়েছে ।
ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলি আগ্রাসন,
শুধু মুসলমানেরা কেন প্রতিবাদ করবে !
বিশ্ব নায়করা নিশ্চুপ কেন?
সন্ত্রাসকে নির্মূল করতে হলে,
বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যক ।
তা না করে যুদ্ধ আর আগ্রাসনে,
সন্ত্রাস যে আরো বেড়ে যাবে ।
তা বিশ্ব নায়কদের কি বোধগম্য নয় !
শক্তি ও ক্ষমতার ভারসাম্য না হলে,
পৃথিবীতে শান্তি আসবে না,
তা কি বুঝতে পারো তোমরা ।
অসম রাজনীতিতে অশান্তি আসে,
সাম্যে এনে দেয় সুখ ও প্রশান্তি ।
এর কোন বিকল্প নেই ।
আমরা স্বস্তি চাই, শান্তি চাই,
জীবন দিতে, যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাই না ।
আর কত লোককে তোমরা মারবে,
তারপর বিবাদ ঝগড়া সারবে ।
বুশ-ব্লেয়ার জোট বেঁধেছে,
মানুষ মারার জাল বুনেছে,
যুদ্ধ করে শান্তি আনার শপথ নিয়েছে ।
বুশের চোখে মুখে রক্ত,
তাই ব্লেয়ার এতো ভক্ত,
দুনো মিলে শুধু রক্ত ঝরাতে চায় ।
ব্লেয়ার ইজ এ লায়ার, বিগ লায়ার,
জনগণকে ধোকা দিয়ে
ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে ।
ব্লেয়ার-বুশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে
মানুষ মারার জাল বুনেছে ।
আর নীরব থাকলে চলবে না,
এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে ।
অস্ত্রের ঝনঝনানি আর শুনতে চাই না,
আর যেন বোমা নিক্ষেপ না হয়,
আর যেন কাউকে প্রাণ দিতে না হয়,
মুসলমানদের রক্ত যেন আর না ঝরে,
কোন মায়ের কোল যেন খালি না হয়,
কেউ যাতে সব হারিয়ে নিঃস্ব না হয়,
তাহলে এ পৃথিবী হবে ভয়াবহ,
বিচারের নামে চলছে প্রহসন ।
তাই সবাইকে করতে হবে অনশন ।
সন্ত্রাস রুখতে – যুদ্ধ নয়,
বিচার চাই, সব আগ্রাসী খুনি নেতাদের ।
বুশ-ব্লেয়ার তোমাদের অপকর্মের পরিণাম,
এই দুনিয়া-তে-ই দেখে যাবে ।
কারণ তোমরা জানো না,
যুদ্ধ করে সন্ত্রাস নির্মূল করা যায় না,
বরং আরো সন্ত্রাসীদের জন্ম দেয় ।
অপকর্মের বিচার করবে একজন-ই,
যে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহতালা ।
লেখা পারম্ভের তারিখঃ ২৭শে জুলাই ২০০৩
সমাপন হয়ঃ ৩০শে ডিসেম্বর ২০০৩