সাহিত্য


সাহিত্য পাতায় ছাপানোর জন্য আপনার লিখা কবিতা, গল্প, ছড়া, প্রবন্ধ ইত্যাদি লিখে পাঠাতে পারবেন। ভালো লিখাগুলো প্রবাস বার্তা  টুয়েনটীফোর অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হবে । আপনার লিখা আমাদেরকে ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য অনুরুধ করা হচ্ছে । probashbarta24@gmail.com  

                        

আমি খুব অল্প কিছু চাই

– হুমায়ুন আহমেদ

আমাকে ভালবাসতে হবে না,
ভালবাসি বলতে হবে না.
মাঝে মাঝে গভীর আবেগ
নিয়ে আমার ঠোঁট
দুটো ছুয়ে দিতে হবে না.
কিংবা আমার জন্য রাত
জাগা পাখিও
হতে হবে না.
অন্য সবার মত আমার
সাথে রুটিন মেনে দেখা
করতে হবে না. কিংবা বিকেল বেলায় ফুচকাও
খেতে হবে না. এত
অসীম সংখ্যক “না”এর ভিড়ে
শুধু মাত্র একটা কাজ
করতে হবে আমি যখন
প্রতিদিন এক বার “ভালবাসি” বলব
তুমি প্রতিবার
একটা দীর্ঘশ্বাস
ফেলে একটু
খানি আদর মাখা
গলায় বলবে “পাগলি”

যদি মন কাঁদে – হুমায়ূন আহমেদ

যদি মন কাঁদে তুমি চলে এসো
চলে এসো এক বরষায়
এসো ঝরো ঝরো বৃষ্টিতে জল ভরা দৃষ্টিতে
এসো কমলো শ্যামলো ছায়
চলে এসো এক বরষায়

যদিও তখনো আকাশ থাকবে বৈরি
কদমও গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরী
উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো
ঝলকে ঝলকে নাচিবে বজলি আলো
তুমি চলে এসো
চলে এসো এক বরষায়

নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার পরে
মেঘমল্লার বৃষ্টিরো মনে মনে
কদমও গুচ্ছ খোপায় জড়ায়ে নিয়ে
জল ভরা মাঠে নাচিব তোমায় নিয়ে
চলে এসো
তুমি চলে এসো এক বরষায় ।

 

বৃষ্টিতে হই একাকার – রেদোয়ান মাসুদ

মেঘ জমেছে, আকাশ কাপছে, চারিদিকে অন্ধকার

এমন দিনে প্রয়োজন আমার শুধু ভালোবাসার।

আয় না তুই বাইরে আয়, বৃষ্টিতে হই একাকার

ভিজে ভিজে হয়ে যাই আমরা, দুজন দুজনার।

ভালোবাসা বাড়ুক না আজ হোক নিরাকার

যেদিকে খুশি সেদিকে যাবো, না মানি কে কোথাকার।

আয় না তুই বাইরে আয়, ভেঙ্গে সকল অহংকার

দিনটি আজ হয়ে থাকুক না শুধুই ভালোবাসার।

বৃষ্টির দিনে শীতল আবহে কেন থাকবে হৃদয়ে হাহাকার

ভালোবাসার আবরণে জোড়া দেই সকল অধিকার।

চল না আজ দুজন হৃদয়ের খেলায়, হই খেলোয়ার

বৃষ্টির জলে পুলিকিত হৃদয়ে আসুক জোয়ার।

 

ভালবাসি রেদোয়ান মাসুদ (আবৃতি)

শুধু একটি বার বল ভালবাসি
তোমাকে আর কোনদিন ভালবাসতে হবে না।
মরুভূমির তপ্ত বালিতেও পা দিতে হবে না।
আমার জন্য তোমাকে নিশি রাতে পা ভিজাতে হবে না।
আকাশ বাতাস শুনুক তোমার প্রতিধ্বনি।
সবাই জানুক কেউ আমাকে ভালবেসেছিল।
আমার হৃদয়ের ডাকে কেউ সাড়া দিয়েছিলো।
শুধু এতটুকুই আমি চাই, এর চেয়ে বেশি চাই না।
কাছে আস বা না আস, তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।
হৃদয়কে না হয় একটি বার হলেও সান্তনা দিতে পারব
কেউতো অন্তত একটি বার হলেও প্রাণের ছোয়া দিয়েছিল।
কয়েক সেকেন্ড এর জন্য হলেও শুকিয়ে যাওয়া নদীতে
আবার ঝড়ের বেগে অশ্রুর বন্যা বয়েছিল।
শুধু এতটুকুই আমি চাই, এর চেয়ে বেশি চাই না।
এর জন্য তুমি কি চাও?
হয়তোবা আমি তোমাকে আকাশের চাঁদটি এনে দিতে পারবোনা
পূর্ব দিকে উঠা সূর্যটিকেও হাতে তুলে দিতে পারবোনা।
কিন্তু পারবো তোমার জন্য আমি রজনীর পর রজনী জেগে থাকতে
পারবো আজীবন তোমার জন্য অপেক্ষা করতে।
হয়তো আমার এই শুন্য হৃদয়ে এক সময় কেউ স্থান করে নিবে
কিন্তু তুমিতো আর আমার হলে না।
কি হবে ভরে এই শুন্য হৃদয় ?
আমি তো চাইনি অন্য কেউ এসে আমার হৃদয়ে গোলাপ ফুটাক
পোড়া মন আবার সতেজ হয়ে উঠুক।
আমি চেয়েছি শুধু তোমার মুখ থেকে একটি বার হলেও
প্রতিধ্বনি হয়ে বেজে উঠুক একটি শব্দ “ভালবাসি”
শুধু এতটুকুই আমি চাই, এর চেয়ে বেশি চাই না।

 

শিশুর পণ – গোলাম মোস্তফা

এই করিনু পণ
মোরা এই করিনু পণ
ফুলের মতো গড়ব মোরা
মোদের এই জীবন।
হাসব মোরা সহজ সুখে
গন্ধ রবে লুকিয়ে বুকে
মোদের কাছে এলে সবার
জুড়িয়ে যাবে মন।

নদী যেমন দুই কূলে তার
বিলিয়ে চলে জল,
ফুটিয়ে তোলে সবার তরে
শস্য, ফুল ও ফল।
তেমনি করে মোরাও সবে
পরের ভাল করব ভবে
মোদের সেবায় উঠবে হেসে
এই ধরণীতল।
সূর্য যেমন নিখিল ধরায়
করে কিরণ দান,
আঁধার দূরে যায় পালিয়ে
জাগে পাখির গান।
তেমনি মোদের জ্ঞানের আলো
দূর করিবে সকল কালো
উঠবে জেগে ঘুমিয়ে আছে
যে সব নীরব প্রাণ।

বনভোজন – গোলাম মোস্তফা

নুরু, পুশি, আয়েশা, শফি সবাই এসেছে
আম বাগিচার তলায় যেন তারা হেসেছে।
রাঁধুনিদের শখের রাঁধার পড়ে গেছ ধুম,
বোশেখ মাসের এই দুপুরে নাইকো কারো ঘুম।
বাপ মা তাদের ঘুমিয়ে আছে এই সুবিধা পেয়ে,
বনভোজনে মিলেছে আজ দুষ্টু কটি মেয়ে।
বসে গেছে সবাই আজি বিপুল আয়োজনে,
ব্যস্ত সবাই আজকে তারা ভোজের নিমন্ত্রণে।
কেউবা বসে হলদি বাটে কেউবা রাঁধে ভাত,
কেউবা বলে দুত্তুরি ছাই পুড়েই গেল হাত।
বিনা আগুন দিয়েই তাদের হচ্ছে যদিও রাঁধা,
তবু সবার দুই চোখেতে ধোঁয়া লেগেই কাঁদা।
কোর্মা পোলাও কেউবা রাঁধে, কেউবা চাখে নুন,
অকারণে বারে বারে হেসেই বা কেউ খুন।
রান্না তাদের শেষ হল যেই, গিন্নী হল নুরু,
এক লাইনে সবাই বসে করলে খাওয়া শুরু।
ধূলোবালির কোর্মা-পোলাও আর সে কাদার পিঠে,
মিছিমিছি খেয়া সবাই, বলে- বেজায় মিঠে।
এমন সময় হঠাৎ আমি যেই পড়েছি এসে,
পালিয়ে গেল দুষ্টুরা সব খিলখিলিয়ে হেসে।