প্রবাস বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধি আবু তাহের পাটোয়ারি :: করোনা ভাইরাসে আমেরিকার ইতিহাসে বৃহত্তম নাগরিক সুবিধা সরাসরি জনগণের হাতে পৌঁছতে আরো কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিন সপ্তাহ বা ক্ষেত্রে বিশেষে আরও বেশি সময় লাগতে পারে।
তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে আমেরিকানরা জনপ্রতি ১২০০ করে ডলার পাবেন, যাদের বার্ষিক আয় ৭৫ হাজার ডলারের নীচে। স্বামী-স্ত্রী বা দম্পতি মিলে পাবেন ২৪০০ ডলার। ১৭ বছর বয়সের নীচের প্রতি সন্তানের জন্য পাবেন ৫০০ ডলার।
বার্ষিক আয় ৭৫ হাজার ডলার থেকে ৯৯ হাজার ডলার পর্যন্ত কমতে থাকবে এবং বছরে এককভাবে যারা ৯৯ হাজার ডলার আয় করেন, তারা কোন সহযোগিতার যোগ্য বলেই বিবেচিত হবেন না। আমেরিকার ৯০ শতাংশ মানুষই ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ নাগরিক সুবিধা প্রাপ্তির যোগ্য হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মরণব্যাধি করোনা ভাইরাসে নিউইয়র্ক সিটি সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত। বুধবার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে নিউইয়র্ক রাজ্য গভর্নর এন্ড্র কোমো বলেছেন, লকডাউন নিষেধাজ্ঞার কারণে নিউইয়র্কে আক্রান্তের সংখ্যা আগের তুলনায় কিছুটা ধীর গতির।
তিনি বলেন, গত রোববার যেখানে বলা হযয়েছিল- প্রতি দুই দিনে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুন হতে পারে, সেখানে আজ দেখা যাচ্ছে দ্বিগুন হতে সময় লাগবে ৪ দশমিক ৭ দিন। এই অবস্থার উন্নতি ঘটাতে প্রত্যেককে নিজ ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেন তিনি।
রাজ্য গভর্নর আরো বলেন, ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টিতে মার্চ মাসের শুরুর দিকে করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার ছিল, সেখানে সেই সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। আর এই নিয়ন্ত্রণের পেছনে কারণ ছিল সবকিছু লকডাউন করে দেয়া।
এসব ছাড়াও যাদের অভিবাসন কাগজপত্রে জটিলতা আছে, বৈধতার কাগজ পত্র নাই তারা নানা চ্যারিটিতে সাহায্যের আবেদন করতে পারবেন। এসব সহযোগিতার জন্য কোন অভিবাসন পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হয় না অধিকাংশ ক্ষেত্রে।
নাগরিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে কংগ্রেসের আইনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের দেয়া ঋণের পেমেন্ট স্থগিত রাখা হয়েছে। কর্মহীনদের জন্য চার মাসের ভাতা প্রাপ্তই নিশ্চিত করা হয়েছে। এসবের বাইরে ক্ষুদ্র ব্যবসায় ঋণ দেয়া , এয়ারলাইন্স কোম্পানি সহ বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতার অর্থ আছে এ ফেডারেল অনুদানে।
বাড়ির মালিকদের ফেডারেল ব্যাকড মর্টগেজের বিলম্ব ফি দুই মাসের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। এ জন্য বাড়ির মালিকদের ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করত হবে। ভাড়াটেদেরও দু’মাসের জন্য উচ্ছেদ করা যাবে না। তাদের ওপর বাড়ির মালিকরা বিলম্ব ফি আরোপ করতে পারবে না।
চার মাসের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে দিতে ভাড়াটেদের বলতে পারবে না। কর্মহীন লোকজনকে বেকার ভাতা দেয়া হচ্ছে। দ্রুতই এ ভাতার আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হবে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ফুড স্ট্যাম্পের আবেদন দ্রুততার সাথে মঞ্জুর করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কের বাইরে গেলেই ১৪ দিনের স্বেচ্ছা নির্বাসন: এদিকে নিউইয়র্ক থেকে বের হয়ে অন্য কোনো অঙ্গরাজ্যে গেলে প্রত্যেকেরই ১৪ দিনের স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকতে হবে।
করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস এ ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নিয়োজিত সংস্থার দায়িত্বে থাকা ড. দেবোরাহ বার্কা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ৫৬ শতাংশ আক্রান্ত মানুষ নিউইয়র্ক মেট্রো এলাকার। তাই তারা বাইরে গেলে তাদের কোরেইন্টাইনে থাকতে হবে।
এই মহামারী সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরামর্শদাতা ড. অ্যান্টনি ফাউসি বলেন, নিউইয়র্ক সিটি থেকে অন্য অঙ্গরাজ্যে যাওয়া প্রতি এক হাজারে একজন আক্রান্ত হচ্ছেন করোনা ভাইরাসে।
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আনডকুমেন্টটেডরা করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করতে গেলে আইস বা ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ গ্রেফতার করবে না বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।