প্রবাস বার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম নিউজ ডেস্ক :: ভারতের পত্রপত্রিকায় একটি দুঃখজনক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, ‘গত অক্টোবরে বিজিবি’র গুলিতে ভারতীয় বিএসএফের এক জওয়ান নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশের বিজিবি সদস্যকে কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট এরিয়ার ডিআইজি র‌্যাংকধারী সেক্টর কমান্ডারসহ বিজিবির ১নং ব্যাটালিয়নের কম্যান্ড্যান্টকে বদলি করা হয়েছে এবং একজন হাবিলদারকে কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া চলছে।’ বিএসএফ ডিআইজি এস এস গুলেরিয়ার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এতবড় একটা ভয়ংকর খবর ভারতের পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে!

অথচ আমাদের দেশের কোন সংবাদমাধ্যমে এখন পর্যন্ত এটার কোন উল্লেখই নাই! তাই আমাদের সরকারকে স্পষ্ট করে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে হবে। আর এটা যদি মিথ্যা হয়, তাহলে আমাদের সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ভারতীয় অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে দিল্লির কাছে কৈফিয়ৎ চাইতে হবে।

অন্যদিকে ভারতের এই সংবাদ যদি আসলেই সত্য হয়, তাহলে সরকারকে অবশ্যই দেশবাসীর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। দেশরক্ষার প্রতিদানস্বরুপ বিজিবির দেশপ্রমিক কমর্কতারা কেন শাস্তির মুখোমুখি হবে? দেশপ্রেম কেন শাস্তির কারন হবে?

নিজেদের আত্মরক্ষার অধিকার কেন আমাদের সেনাসদস্য কিংবা সীমান্তরক্ষীদের থাকবে না? ভারত বিরোধিতা কেন মৃত্যুর কারন হবে? নিজের দেশরক্ষার চাইতে সরকারের ক্ষমতা রক্ষা কেন এতটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ হবে? সীমান্তরক্ষীদের নিজেদেরকে রক্ষারই যদি কোন অধিকার না থাকে, তাহলে তারা দেশের সীমান্ত কিভাবে রক্ষা করবে? আর সীমান্ত রক্ষার অধিকার না থাকলে, দেশ রক্ষা কিভাবে করবে?

দেশের সীমান্ত রক্ষা করতে গিয়ে বিজিবির দেশপ্রমিক বীর অফিসাররা এমন কি অপরাধ করেছেন, যার জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোর্টমার্শাল হবার মত প্রসিডিং নিতে হলো? একথার সদুত্তর অবশ্যই সরকারকে দিতে হবে। আমাদের দেশের অভ্যন্তরে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে আমাদের নদীতে এসে মাছ চুরি করে নিয়ে যাবে!

আর আমাদের বিজিবি বাধা দিলে তারা গুলি করবে! তারপরও অামাদের বিজিবি’র নিজেদেরকে রক্ষা করার কোন অধিকার থাকবে না- এটা কোন রামরাজত্বের দাসখত? দেশপ্রেম দেখালে কোর্টমার্শালে বিচার হবে, বদলী করে শাস্তি দিবে- স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্রের এ কেমন অদ্ভুত নিয়তি!

এই যে সার্বক্ষণিক চেতনার শ্লোগান দেই, আসলেই যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি সরকারের সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধ থাকতো। নিজ দেশের মানুষের প্রতি নূন্যতম ভালোবাসাটুকু থাকতো। তাহলে আজ এই জাতীয় বীরদেরকে তাদের দেশপ্রেম ও বীরত্বের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বীরোচিত সংবর্ধনা দেয়া হতো। অথচ তাদের কপালে পুরস্কারের বদলে আজ জুটলো শাস্তি, বদলী আর কোর্টমার্শাল!

লীগ-ভারতের শাসনামলে হয়ত আমরা এর বিচার পাবো না! সরকারের কাছ থেকে হয়ত এর কোন সদুত্তরও পাবো না। আর ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যেই মুখ খুলবে, তাকেই বুয়েটের আবরারের মত পিটিয়ে মারা হবে! এটাই হয়ত এই মজলুম জাতির নিষ্ঠুর নিয়তি! তবে ভুলে গেলে চলবে না, দেশের উপর কিংবা দেশপ্রমিক সৈনিকদের উপর যেকোনো অবিচারের বিরুদ্ধে প্রচন্ড গর্জনের সদা অপেক্ষমাণ ১৬ কোটি দেশপ্রমিক মজলুম জনতা।

ডক্টর তুহিন মালিক : আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here