প্রবাস বার্তা ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ওল্ডহ্যামের কোল্ডহার্ষ্ট লেবার পার্টির সদস্যরা তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই পার্টির কাউন্সিলার প্রার্থী নির্বাচন করে আসছে। গত ৪টা মে ২০১৯ নির্বাচনেও, ১৯ শে জানুয়ারীতে স্থানীয় সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে কোল্ডহার্ষ্ট ওয়ার্ডের প্রথম নির্বাচিত বাঙালি মহিলা রুজি সুরজানকেও দলের অধিকাংশ সদস্যরা ভোট দিয়ে প্রার্থী নির্বাচিত করেছেন।
এবার হঠাৎ করে কোল্ডহার্ষ্ট ওয়ার্ড কমিটি স্থানীয় কাউন্সিলারদের যোগসাজশে বাতিল করা হল। কিন্তু লেবার পার্টির অধিকাংশ সদস্যরা মনে করেন এটা সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং স্বৈরাচার মূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। কারণ তাদের এক গুয়োমী নেতৃত্বকে পাকাপোক্ত করার জন্য সাধারণ সদস্যদের সাথে আলাপ আলোচনা ব্যতিরেকে কোল্ডহার্ষ্ট লেবার পার্টি বিলপ্তিকরণ এক দুঃখনীয় ব্যাপার। স্থানীয় সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা হলে এ ব্যাপারে তারা ক্ষোভ পেকাশ করেন।
এখন কোল্ডহার্ষ্ট ওয়ার্ডের প্রার্থী নির্বাচিত করার আর কোন অধিকার নেই। এর ফলে লেবার পার্টি থেকে নতুন নেতৃত্ব আসা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেল। স্থানীয় সদস্যরা লেবার পার্টির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। কোল্ডহার্ষ্ট ওয়ার্ডে প্রায় ৯৫ ভাগ বাঙ্গালী অধ্যসিত এলাকা। এখানেই বাংলাদেশের বাহিরে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার ও বাংলাদেশের আদলে জাতীয় শাপলা ফুল দিয়ে নির্মিত একটি রাউন্ডএবাউট যার নামকরণ হয় শাপলা ছত্তর।
এছাড়াও ছিল বাঙ্গালীর নিজস্ব অর্থায়নে সম্পূর্ণ মালিকানাধীন একটি বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টার। যেখানে বাংলায় লিখা ছিল বাংলাদেশ কালচারেল সেন্টার। যে সেন্টারটিও পরবর্তীতে বাঙ্গালীদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে, কোন এক গুষ্টি কাউন্সিলারদের সহযোগিতায় বাংলায় লিখা নামটি মুছে ফেলে মিলেনিয়াম নাম করণ করে সেন্টারটি স্থানীয় কাউন্সিলের কাছে তুলে দেন।
ওল্ডহ্যাম কাউন্সিল বেশির ভাগ সময় লেবার নিয়ন্ত্রিত থাকায় এই ওয়ার্ডের ৮০ ভাগ বাঙ্গালীরা লেবার দলকে চুখ বন্ধকরে ভোট দিয়ে থাকেন। এই ওয়ার্ড থেকেই সর্ব প্রথম ১৯৯৪ সালে লেবার দল থেকে বাঙ্গালী কাউন্সিলার নির্বাচিত হন কাউন্সিলার আব্দুল জব্বার এবং আজ পর্যন্ত তিনিই কাউন্সিলার আছেন। ওল্ডহ্যাম কাউন্সিলের ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯৯৪ সালে যে কোল্ডহার্ষ্ট ওয়ার্ড ছিল অনেক উন্নত আজ ২০১৯ সালে এই কোল্ডহার্ষ্ট ওয়ার্ড সব চেয়ে নিম্ন এবং নোংরা ওয়ার্ড হিসাবে পরিচিত।
যে কোল্ডহার্ষ্ট থেকে জন্ম হয়েছে অসংখ্য বাঙ্গালী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সলিসিটার কিন্তু কাউন্সিলার আব্দুল জব্বার ও এর সাথে বার বার নির্বাচিত হওয়া কাউন্সিলার আব্দুল মালিক উভয়ের নেতৃত্বে দীর্ঘ দিন হলেও নতুন কোন কাউন্সিলারের আবির্ভাব হয় নাই। যার ফলে লেবার দল থেকে বার বার নির্বাচিত কাউন্সিলারদের মধ্যে এখন একটা ভয়ের সঞ্চার হয়েছে, যদি কোন নতুন মুখ এসে তাদেরকে সরিয়ে দেয়, তাই তারা যেভাবেই হোক ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য উপর লেভেল থেকে লবিং করে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিটিকে বাতিল করে দেন। এর ফলে এই ওয়ার্ডে লেবার পার্টি থেকে আর কোন নতুন প্রার্থী আসতে পারবে না এবং তারাই আজীবন কাউন্সিলার থেকে নেতৃত্ব দিবেন।
স্থানীয় লেবার দলের অধিকাংশ সদস্যরাই মনে করেন, এটা তাদের স্বৈরাচারী আচরণ, সদস্যরা অনেকেই মাসে ৪ পাউন্ড ৩০ পেনি অর্থাৎ বছরে ৫১ পাউন্ড ৬০ পেনি পরিশোধ করে সদস্য হয়েছেন। বছরের পর বছর তারা এই টাকা পে করে যাচ্ছেন যে গণতন্ত্রের জন্য হঠাৎ করে তাদের এই গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হল কেন এবং কোন স্বার্থে?