গত সপ্তাহে স্টেপনী থেকে এক ভাই আমার বাসায় আসেন। আমার হাতে ১৬ পাউণ্ডের একটা এনভেলাপ দিয়ে বললেন যে, আমার মরহুম চাচাতো ভাই জনাব আব্দুল হামিদ চৌধুরীর এই অর্থ অন্য লোকের কাছে পাওনা ছিল। তিনি মারা যাওয়ার সংবাদ পেয়ে এই ১৬ পাউণ্ড আমার কাছে দেওয়ার জন্য দিয়ে গেছেন ।
গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল ইউকের সাবেক চেয়ারপারসন আলহাজ্ব এম আলাউদ্দিন আহমদ মৃত্যুর তিন দিন আগে হাসপাতাল থেকে ফোন করে দেখতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সাংবাদিক খান জামালকে সাথে করে নিয়ে যাওয়ার পর তিনি আমার কাছে অতীতে কোন ভুল ত্রুটি করে থাকলে ক্ষমা চাইলেন এবং আমার ফোন দিয়ে দেশে বিদেশে অনেকের সাথে কথা বলে ক্ষমা করে দিতে বললেন। উনার স্ত্রী আমার হাতে ৩২ পাউন্ড তুলে দিয়ে বললেন -এ অর্থ নাকি আমার পাওনা। ১০ বছর আগে আমার কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন।আমিতো হতবাক ।আমার কোন কিছু মনে নেই ।পরে আমি এই অর্থ উনার এতিমখানায় দান করে দেই। একজন মানুষের আল্লাহর প্রতি ভয় থাকলে পরের ঋণ নিয়ে কবরে যেতে পারেনা । তাদের ভয় ছিল। পরের ঋণ পরিশোধ করেছেন।
আমাকে একদিন নর্থ ওয়েলসের প্রবাসী মুক্তিযাদ্ধা কবি সুরুজ্জামান চৌধুরী বললেন যে -অনেক লোকের কাছে তাঁর হাজার হাজার পাউণ্ড অর্থ পাওনা রয়েছে । কিন্তু কেউ দিতে চায়না । তিনি অর্থ ফেরত না দিলে মাফ করবেন না । আমাদের সমাজে বেশীর ভাগ লোক অর্থ ঋণ নিলে ফেরত দিতে চায় না ।
রাসুলে পাক (সঃ) ঋণ থাকা অবস্থায় জানাযার নামাজ পড়াননি। ঋণ হল বান্দার হক। এ ঋণ পরিশোধ না করায় জাহান্নামে জ্বলতে হবে। হাশরের ময়দানে নিজের সব এবাদত পাওনাদারদের ঋণের বদলে দিতে হবে ।পরের সম্পদ ও অর্থ আত্নসাতের এক উৎসব সমাজে চলছে। কি আলেম আর কি জাহেল। কি নামাজী আর কি বেনমাজী। বেশীর ভাগ লোক পরের ধনে পোদ্দারী করে আর মানুষকে ঠকিয়ে সম্পদ বানাতে চায়।
করোনায় বেশী লোক মারা যাচ্ছে । তাই সবাইকে বলবো -কবরে যাওয়ার আগে মানুষের পাওনা পরিশোধ করে যান । মরে গেলে আর ফেরত দেওয়ার সুযোগ পাবেন না । আমি কত লোককে অর্থ ঋণ দিয়েছি । কিন্তু ফেরত দিতে চায়না।
আমার জানা মতে -আমাদের সমাজের অনেক লোক অন্যের কাছে ৮০ হাজার পাউণ্ড পর্যন্ত পান । বিচার করে রায় দিয়েছি । কিন্তু অর্থ ফেরত দেয়নি । আদালতে মামলা হচ্ছে । এ সমস্ত জাহেলদের বলবো- পরের ঋণ তাড়াতাড়ী পরিশোধ করেন । তা-নাহলে দুনিয়া ও আখেরে লান্চিত হবে । আমাদের কাছে কারো পাওনা থাকলে আমরা দিতে প্রস্তুত । পরের ঋণ পরিশোধ করে কবরে যাওয়ার সবাইকে তাওফিক দিন ।