প্রবাস বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকম আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্কঃ জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা-সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের পর রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান মেহবুবা ভারত সরকারের নেয়া এ সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্রের কালো দিন বলে মন্তব্য করেছেন।
ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল ইন্ডিয়া ট্যুডের কাছে পাঠানো এক অডিও বার্তায় জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ৫ আগস্ট গণতন্ত্রের জন্য একটি কালো দিবস। এই দিন কাশ্মীরের জনগণকে দেয়া অধিকার পার্লামেন্টের চোরের দল কেড়ে নিয়েছে।
ঐ অডিও বার্তায় তিনি আরও বলেছেন, ভারত এত বড় একটি দেশ, তারপরও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ছোট একটি রাজ্যের ভয়ে ভীত। ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে কেন এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলো?
কাশ্মীরের জনগণের সঙ্গে ভারত প্রতারণা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সরকার এবং ঐক্যবদ্ধ ভারতে বিশ্বাস করি; কিন্তু তারা আমাদের এ বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। জনগণ এখনো চিন্তা করছে যে, তারা পাকিস্তানে যোগ না দিয়ে ভুল করেছেন।
এর আগেই রাজ্যে বিপুল পরিমাণে আধা-সামরিক সেনা মোতায়েন করার কথা বলা হয়েছিল যেন ৩৭০ ধারা বাতিল করায় কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনও অসন্তোষ প্রদর্শিত হলে তার মোকাবিলা করা যায়।
ইতোমধ্যেই কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে মোবাইল যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা। নিষিদ্ধ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ। রবিবার গভীর রাতে থেকে কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহকে গৃহবন্দি করে ভারত। এছাড়াও নিজের বাড়িতে নজরদারির মধ্যে রয়েছেন সেখানকার আরেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ ও পিপলস কনফারেন্স পার্টির চেয়ারম্যান সাজাদ লোন। পাশাপাশি রবিবার মধ্যরাত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে শ্রীনগরে।
সোমবার (৫ আগস্ট) রাজ্যসভায় এ সংক্রান্ত নতুন বিলের প্রস্তাব করেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যেখানে ভারতীয় সংবিধানের যে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে কাশ্মীরকে দেয়া স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদা তুলে নেয়ার কথা বলা হয়।
৭০ এবং ৩৫-এ ধারা বাতিল তথা স্বায়ত্তশাসন বাতিল, কাশ্মীর ভেঙে দুই ভাগ করার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ এতে স্বাক্ষর করেছেন। কেন্দ্রের এ প্রস্তাবে উত্তাল ভারতের সংসদ। কংগ্রেসসহ বিরোধীদের তীব্র বিরোধিতাতেও এক তরফা ভাবে বিলটি পাস করলো চরম হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার।