রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সিলেটে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। এতে সিলেট নগরের অর্ধেকের বেশি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও কোমর সমান পানিতে ডুবে আছে নগর। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে অনেক এলাকার মসজিদ ও ঈদগাহ।
ভারি বর্ষণে সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর, দরগামহল্লা, পায়রা, সুবিদবাজার, বনকলাপাড়া, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, কাজলশাহ, মেডিকেল রোড, বাগবাড়ি, কালীবাড়ি, হাওলাদারপাড়া, সোবহানীঘাট, উপশহর, যতরপুর, তেরোরতন, সোনারপাড়া, কেওয়াপাড়া, সাগরদিঘিরপার, পাঠানটুলা, মিয়া ফাজিলচিশত, জালালাবাদ, হাউজিং এস্টেট, শাহী ঈদগাহ, ঘাসিটুলা, হাওয়াপাড়া, মীরাবাজার, শিবগঞ্জ, মাছিমপুর, জামতলা ও তালতলা এলাকায় পানি থই থই করছে। রাস্তাঘাট কোথায় হাঁটু পর্যন্ত, কোথাও কোমর পর্যন্ত ডুবে আছে।
সোমবার নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এমনটা জানা যায়।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব গণমাধ্যমকে জানান, রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১৭৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরও দুদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সান্তনু দত্ত সন্তু গণমাধ্যমকে বলেন, রোববার রাতেই আমার ওয়ার্ডের তালতলা, মাছুদিঘীর পাড়, জামতলা, মনিপুরী রাজবাড়ী, রামের দিঘীরপাড়, খুলিয়া পাড়া, তোপখানাসহ প্রায় সব এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। নগরের বনকলা পাড়া এলাকার আব্বাসী জামে মসজিদে পানি ঢুকে পড়েছে। এই মসজিদে সকালে ঈদের জামাত হওয়ার কথা ছিল।
নগরের বিভিন্ন এলাকা ডুবে যাওয়ায় হযরত শাহজালাল (র.) মসজিদ ঈদের বিশেষ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় বলে জানিয়েছেন দরগার খাদেম মুফতি আব্দুল খাবির।
নগরের বাসিন্দারা বলেন, বাসায় পানি, রাস্তাঘাটও পানির নিচে। কুরবানি দেওয়া নিয়ে বিপাকে আছি।
এদিকে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বেশ কয়েকটি এলাকার। এসব এলাকার বাসা বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।
এছাড়াও জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর ও তাহিরপুর উপজেলার অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জেলার অন্তত শতাধিক অভ্যন্তরীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।