২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর কিছু শীর্ষ কমান্ডারের বিরুদ্ধে মার্কিন গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি মানবাধিকার নিষেধাজ্ঞার পরে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং বলপূর্বক গুম নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা নির্দেশ করে যে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বাহিনীর অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষমতা রাখে। অথচ, সংস্কারের দিকে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে, কর্তৃপক্ষ মানবাধিকার রক্ষাকর্মী এবং বলপূর্বক গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের বিরুদ্ধে হুমকি প্রদান এবং ভয় দেখানোর প্রচারণা শুরু করেছে।

বাংলাদেশ প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান করে চলেছে, তবে কর্তৃপক্ষ তাদের জীবন-জীবিকা, চলাচল এবং শিক্ষার উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আন্তর্জাতিক নজর হ্রাস পেয়েছে এবং এটি লেখার সময় রোহিঙ্গা মানবিক সংকটের জন্য ২০২২ সালের জয়েন্ট রেসপন্স পরিকল্পনাটি গুরুতরভাবে অর্থায়ন সংকটে পড়ে রয়েছে।

আগস্ট থেকে শুরু করে, রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান আক্রমণ, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের আগে সহিংসতা ও দমন-পীড়নের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

মার্চ মাসে, শিশু শ্রম সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর কনভেনশন ১৩৮ কে বাংলাদেশ সমর্থন জানায়, যা বাংলাদেশকে আইএলও এর সকল মৌলিক উপকরণের একটি পক্ষ করে তোলে।

মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের ওপর হামলা

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পরে, ভুক্তভোগীদের পরিবারগুলি জানিয়েছে যে কর্মকর্তারা তাদের বাড়িতে এসে, তাদের হুমকি দিয়েছিল এবং তাদের মিথ্যা বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিল যে তাদের আত্মীয়কে জোর করে নিখোঁজ করা হয়নি এবং তারা ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশকে বিভ্রান্ত করেছে। নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকার কর্মীদের ওপর নজরদারি এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে হয়রানি দুটোই বাড়িয়েছে । জাতিসংঘের অধিকার বিশেষজ্ঞরা সরকারকে প্রতিশোধ নেয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিদেশে ভিন্নমতাবলম্বীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে যারা “রাষ্ট্রবিরোধী” কার্যকলাপ করছে এবং কর্তৃপক্ষ ক্রমবর্ধমানভাবে প্রবাসী ভিন্নমতাবলম্বীদের আত্মীয়দের টার্গেট করে যাচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসে, গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা লন্ডন ভিত্তিক সংবাদ সম্পাদক শামসুল আলম লিটনের ভাইকে গ্রেপ্তার করে যখন তিনি ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনামূলক সম্পাদকীয় প্রকাশ করেন এবং গুমের বিরুদ্ধে ব্রিটেনে বিক্ষোভ সংগঠিত করেন। একই মাসে, একই পত্রিকার আরেক জন লন্ডন ভিত্তিক সংবাদদাতার ভাই, আব্দুল মুক্তাদির মনুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রায় ছয় মাস আটক থাকার পর জামিন পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাংবাদিক কনক সারওয়ারের বোন, নুসরাত শাহরিন রাকা।

সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে মানবাধিকার সংস্থাগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করে চলেছে। ২৫ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত ফাঁস হওয়া একটি সরকারি পরিপত্র থেকে দেখা যায় যে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া হিসাবে বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থাকে বিদেশী তহবিল নিরীক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

৫ই জুন, বেসরকারি সংস্থা অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো দেশের অন্যতম প্রধান মানবাধিকার সংস্থা অধিকার এর নিবন্ধন নবায়নের বিষয়টি অস্বীকার করে অধিকারকে একটি চিঠি পাঠায়। গত ১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। অধিকারের সেক্রেটারি, আদিলুর রহমান খান, এবং পরিচালক, এএসএম নাসরুদ্দিন এলান, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ওপরে প্রতিবেদন করার কারণে সংস্থাটিকে শাস্তি দেওয়ার দীর্ঘস্থায়ী হয়রানির অংশ হিসাবে চলমান বিচারের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার পর অত্যাচারের মাত্রার সাময়িক হ্রাস সত্ত্বেও, নিরাপত্তা বাহিনী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সমালোচকদের লক্ষ্য করে পুরানো অনুশীলনে ফিরে যাওয়ার লক্ষণ দেখিয়েছে। সরকার নিষেধাজ্ঞার দিকে নিয়ে যাবার মত অভিযোগগুলিকে খারিজ করেছিল এই বলে যে এগুলো “মিথ্যা এবং বানোয়াট” । জানুয়ারিতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই জন নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত র‌্যাব কর্মকর্তাকে তাদের “সাহসিকতা ও দেশের সেবার” জন্য মর্যাদাপূর্ণ পুলিশ পদক প্রদান করেন।

১৪ই আগস্ট, নেত্র নিউজ – যা বাংলাদেশে ব্লক বা বন্ধ করে রাখা হয়েছে – একটি হুইসেলব্লোয়ার প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেটি উম্মোচন করে যে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা একটি গোপন কারাগারে জোরপূর্বক গুমের শিকার হওয়া ব্যাক্তিদের ধরে রেখেছে এবং নির্যাতন করছে।

হেফাজতে থাকাবস্থায় আদিবাসী কর্মী নবায়ন চাকমা মিলনের নির্যাতন ও মৃত্যু পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচারবহির্ভূত হত্যাজোরপূর্বক গুমযৌন সহিংসতা এবং জমি দখল সহ নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে, যার খুব সামান্যই প্রতিকারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা

কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে কর্তৃপক্ষ সমালোচকদের গ্রেফতার করা অব্যাহত রেখেছে। সরকার অবমাননাকর আইন স্থগিত ও সংস্কারের জন্য জাতিসংঘ থেকে এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের থেকে করা অনুরোধ উপেক্ষা করেছে। জুলাই মাসে, সরকার খসড়া তথ্য সুরক্ষা আইন প্রকাশ করেছে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন যেটি নজরদারি বাড়াতে পারে এবং গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে।

কোভিড-১৯

এই প্রতিবেদনটি লেখার সময়, বাংলাদেশে ২০২২ সালে কোভিড-১৯-এ ৪৪০,০০০ জন নতুন আক্রান্ত হবার ঘটনা এবং ১,৩০০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তদুপরি, এই প্রতিবেদন লেখার সময়, পজিটিভ টেস্টের হার ২৭ শতাংশের উপরে ছিল, যা সংক্রমণের হার রিপোর্টের চেয়ে বেশি বলে ইঙ্গিত করে। কোভিড-১৯ এর কারনে  বিদ্যালয় বন্ধ থাকার প্রায় ১৮ মাস পরে জুলাই মাসে বিদ্যালয় গুলি সম্পূর্ণরূপে পুনরায় চালু হয়েছে, যা বিশ্বের দীর্ঘতম সময়ের মধ্যে একটি। শিশু অধিকার বিষয়ক প্রবক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে দশ হাজার শিক্ষার্থীর মত স্কুলে ফিরে যাইনি এবং এর পরিবর্তে মহামারী চলাকালীন অর্থনৈতিক পতনের মধ্যে এই শিশুদের অনেককেই শিশুশ্রমের দিকে চলে যেতে হয়েছিল।

নারী এবং মেয়েদের অধিকার

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতে, ২০২২ সালের ১লা অক্টোবর পর্যন্ত,  ১৯৩ জন নারী ও মেয়েকে তাদের স্বামী বা স্বামীর পরিবারের দ্বারা হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীদের সুরক্ষা, সেবা বা ন্যায়বিচার চাওয়ার জন্য খুব কম রিসোর্সেস সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের মধ্যে বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি থাকার মধ্যে বাংলাদেশ এখনও অন্যতম।

নারী অধিকার কর্মীদের ব্যাপক প্রতিবাদ ও সমর্থনের পর, মন্ত্রিসভা সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারার একটি খসড়া সংশোধনী অনুমোদন করেছে, যেটি নারী যদি যৌন সহিংসতার জন্য ফৌজদারি অভিযোগ দাখিল করে তবে তা নারীদেরকে তাদের চরিত্রগত অবমাননাকে প্রতিহত করার মত বিষয়গুলোকে অপসারণ করে।

যৌন ওরিয়েন্টেশন এবং লিঙ্গ পরিচয়

বাংলাদেশে সমকামী আচরণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় যার শাস্তি ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। নারী সমকামী, পুরুষ সমকামী, উভকামী, এবং ট্রান্সজেন্ডার জনগণ এবং আইনজীবীরা পুলিশের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ছাড়াই সহিংসতা এবং হুমকির সম্মুখীন হয়েছে।

প্রতিবন্ধী অধিকার

সেপ্টেম্বরে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার বিষয়ক কমিটি বাংলাদেশে ভিত্তিক পর্যালোচনায় সমাপনী পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করে, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী নারী ও মেয়েদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এমন বৈষম্যের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

সেপ্টেম্বরে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মে মাসে সিলেটে আকস্মিক বন্যার পর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের এবং তাদের পরিবারের সাক্ষাতকার নিয়েছিল যেখানে বন্যার কারণে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল এবং শতাধিক নিহত হয়েছিল। সাক্ষাৎকারীরা সতর্কতা ব্যবস্থার অভাব বর্ণনা করেছেন যা তাদের প্রস্তুত করতে এবং আশ্রয় খুঁজতে সক্ষম করতে পারতো। বন্যার পরে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা শৌচাগার, খাবার, জল এবং ওষুধের সুবিধা পেতে অতিরিক্ত বাধার মুখোমুখি হয়েছিল, যা তাদের জীবন ও স্বাস্থ্যকে ক্রমাগত ঝুঁকিতে ফেলেছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলিতে, বাংলাদেশের কর্মকর্তারা কমিউনিটির -নেতৃত্বে পরিচালিত স্কুলগুলি বন্ধ করে দিয়েছেনির্বিচারে দোকানগুলি ধ্বংস করেছে এবং হুমকি, ঘন ঘন কারফিউ এবং চেকপয়েন্টে হয়রানি সহ চলাচলে নতুন নতুন বাধা আরোপ করেছে। সরকার ক্যাম্পে মানবাধিকার কর্মীদের মিয়ানমারের পাঠ্যক্রম শেখানোর অনুমতি দিয়েছে কিন্তু শরণার্থী শিশুদের কোনো স্বীকৃত শিক্ষা্র বিষয়টি অস্বীকার করে চলেছে।

কর্তৃপক্ষ প্রায় ৮,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসান চরে স্থানান্তরিত করেছে, যার ফলে মোট ২৮,০০০ শরণার্থী এই প্রত্যন্ত পলি দ্বীপে বসবাসরত যেখানে তারা গুরুতর চলাচলের বিধিনিষেধ, খাদ্য এবং ওষুধের ঘাটতি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর)- এর  জড়িত থাকা সত্ত্বেও, অনেককে সম্পূর্ণ, অবহিত সম্মতি ছাড়াই, স্থানান্তর করা অব্যাহত রয়েছে এবং মূল ভূখণ্ডে ফিরে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে

জানুয়ারিতে, বাংলাদেশ সরকার এবং মায়ানমার জান্তা স্বেচ্ছায়, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের বিষয় সম্পর্কিত শর্ত না থাকলেও প্রত্যাবাসনের জন্য “দ্রুতগতিতে যাচাইকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার” যৌথ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে

রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং আরাকান আর্মির জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে ক্রমাগত লড়াই সীমান্তের ওপারে ছড়িয়ে পড়েছে, যা বিপন্ন করে তুলেছে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশের বেসামরিক নাগরিকদের।

জলবায়ু পরিবর্তন নীতি এবং কার্যাবলি

ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে সামান্য অবদান রাখা সত্ত্বেও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে একটি।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে, ঘূর্ণিঝড়গুলি আরও তীব্র এবং ঘন ঘন সংগঠিত হবে, যা দেশের নিচু উপকূলরেখা বরাবর বসবাসকারী কয়েক মিলিয়ন মানুষের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি সৃষ্টি করবে। জুন মাসে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রেকর্ড মাত্রার বন্যায় বাংলাদেশের আনুমানিক ৭.২ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

চট্টগ্রামে একটি চলমান কয়লা ও গ্যাস প্রকল্প নির্মাণ করা হলে, বাংলাদেশের বার্ষিক গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনের পাঁচ বছরের সমান গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হবে, সেইসাথে বায়ু দূষণ যা স্থানীয় জনসংখ্যা এবং জীববৈচিত্র্যের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়াবে। জুন মাসে, সরকার ঘোষণা করেছে যে এটি জাপানি বিনিয়োগের ক্ষয়-ক্ষতির কারণে বিতর্কিত মাতারবাড়ি ২ কয়লা কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করেছে। কিন্তু সরকার এখন এর পরিবর্তে একটি তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের পরিকল্পনা করছে, যা বাংলাদেশকে কয়েক দশক ধরে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মধ্যে আটক করে রাখবে।

প্রধান আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিগন

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট, আগস্ট মাসে বাংলাদেশে তার তিন-দিন ব্যাপী সফরকালে, অধিকার রক্ষার জন্য এবং “বলপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ তদন্ত” করার জন্য একটি স্বাধীন প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করার সরকারকে আহ্বান জানান। আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি বিশেষ ব্যবস্থা তৈরি করতে তিনি তার অফিসের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি আরও সতর্ক করে বলেছিলেন যে “জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ইউনিফর্মধারী কর্মীদের সবচেয়ে বড় অবদানকারী হিসাবে, বাংলাদেশের উচিত নিরাপত্তা কর্মীদের মানবাধিকার সম্পর্কিত সতর্কতা মূলক স্ক্রিনিংয়ের জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।”

৩ মার্চ, জাতিসংঘ নির্যাতনের বিরুদ্ধে কনভেনশনের অধীনে ২০১৯ এর বাধ্যবাধকতা সমূহের পর্যালোচনার সময় অত্যাচারের অভিযোগ সমূহ সম্পর্কে করা সুপারিশ সমূহ বাস্তবায়নের তথ্য প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানায়

মার্চ মাসে, একটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের মনিটরিং মিশন মানবাধিকার পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছিল এবং এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) স্কিমের অধীনে বর্ধিত নিযুক্তি প্রক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে অগ্রগতির আহ্বান জানিয়েছে। মে মাসে আরও আলোচনা হয়েছিল। এছাড়াও মার্চ মাসে, যুকরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি, ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড, ইউএস-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব সংলাপের সময় বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেছিলেন, যে সময় তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচারে জন্য জবাবদিহিতার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ চীন ও ভারতের মধ্যে একটি কৌশলগত সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছিল এবং উভয়ই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং জাপানের আহ্বান জনসমক্ষে সমর্থন নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here