প্রবাস বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকম নিউজ ডেস্ক :: লন্ডন ও নিউইয়র্কে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান কিভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুললেন ? যুক্তরাজ্যের কোম্পানিজ হাউস একাউন্ট, মর্টগেজ চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রির লেনদেন সম্পর্কিত প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ব্লুমবার্গ যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পতি সম্পর্কিত এ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
রোববার ব্লুমবার্গের এক রিপোর্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যে তার এসব সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে লন্ডনের কেন্দ্রস্থল থেকে টাওয়ার হ্যামলেটস আবাসন এলাকায় কয়েকটি বিলাসবহুল এপার্টমেন্ট এবং লিভারপুলে শিক্ষার্থী নিবাস।
এমন সময় এগুলো কেনা হয় যখন যুক্তরাজ্যে গুরুতবপূর্ণ আবাসন খাতে চরম ঘাটতি চলছিল। তার এ সম্পত্তি ক্রয়ের ঘটনায় যুক্তরাজ্যের অর্থপাচার রোধ আইনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কেও রয়েছে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তি। নিউইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থার সদরদপ্তরের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তিগুলোর মধ্যে প্রায় ২৫০টির ৯০ শতাংশই একেবারে নতুন নির্মাণ অবস্থায় কেনা হয়েছিল।
সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তি কেনার ঘটনায় রাজনীতিকদের সম্পদ ক্রয়ের ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয় কিনা তা নিয়ে দেশটিতে নতুন করে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।
ব্লুমবার্গ যুক্তরাষ্ট্রের মানহাটানে সাইফ্জ্জুামান চৌধুরীর অন্তত ৫টি সম্পত্তি সনাক্ত করেছে। ২০১৮ থেকে ২০২০ সালে এসব সম্পত্তি কেনা হয়।
মিউনিসিপ্যালিটির সম্পত্তির রেকর্ড অনুযায়ী এসব সম্পত্তির দাম প্রায় ৬০ লাখ ডলার। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সাইফুজ্জামান চৌধুরী সংসদ সদস্য হিসাবে পুণর্নির্বাচিত হলেও মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন।
এর আগে তিনি ভূমি সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশ সরকার মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তোলার এ খবর আসল।
এতে দেশের কোন নাগরিক বছরে ১২ হাজার পাউন্ডের বেশি বিদেশে নেতে পারবেন না। এতে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর এ বিশাল সম্পত্তির বৈধতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্বের দুইটি সবচেয়ে বড় শহর জুড়ে রয়েছে তার বিশাল সম্পত্তি। রাজনীতিকসহ বিদেশিদের বিনিয়োগের বড় আকর্ষণ যুক্তরাজ্য।
সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পত্তির বিষয়টি বিদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য প্রতারণার বিষয় ফুটে উঠেছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাজ্যের আইন আরও কঠোর করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে ব্লুমবার্গ তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।
রাশিয়ার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী লন্ডনে তাদের সম্পদ লুকিয়ে রাখতে পারেন বলে সমালোচনার মুখে সরকার যখন বিদেশিদের সম্পত্তির মালিক হওয়ার বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা বিধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সে সময়েই এসব সম্পত্তি কেনা হয়।
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর এ প্রক্রিয়ার ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।