সিলেটে পানি সুরমা নদীর বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে

0
952

প্রবাস বার্তা ২৪ ডট কমের সিলেট প্রতিনিধিঃ  সুনামগঞ্জের পানি কমলেও সিলেটে পানি সুরমা নদীর বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভেসে যাচ্ছে সিলেটের নতুন নতুন এলাকা। সাধারন মানুষের চলাচল কঠিন হয়ে উঠছে। ভারি বর্ষণে বেড়েই চলেছে সিলেটের সব কোটি নদ নদীর পানি। নদী গুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সৃষ্ট আগাম বন্যায় যোগ হয়েছে প্রবল বর্ষণ। শনিবার তেরোই জুলাই দিনের প্রথম থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও দুপুরের পর থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলে সৃষ্ট অকাল বন্যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট, কম্পানিগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও সদর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলায় অন্তত ১৯ টি ইউনিয়নে শতাধীক গ্রামের কমপক্ষে ১ লাখ ২০ হাজার লোক জনদুর্ভোগে পড়েছেন বন্যার খবরা খবর রাখতে জেলা প্রশাসন ছাড়াও ১৩ টি উপজেলায় একটি করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেটের জেলা প্রশাসন।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক আসলাম উদ্দিন বলেন এইসব উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গোয়াইনঘাট উপজেলার লোকজন এই উপজেলায় ২৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি । এছাড়া অন্যান্য উপজেলা গুলোতেও চার পাঁচটি ইউনিয়নের লোকজনকে বন্যা ছুঁয়ে ফেলেছে। ওইসব উপজেলা গুলোকে ৪১ টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বানভাসি মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে উজানের ঢলে বিপজ্জনকভাবে ফুটে উঠেছে সুরমা কুশিয়ারা সহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি।

সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানির গতি প্রবাহ ছিল ১০ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টের পানি বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারা নদীর কানাইঘাট পয়েন্ট ১৩ দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। অর্থাৎ বিপদ সীমার ১৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহমান ছিল। কুশিয়ারা নদীর মৌলভিবাজার এর শেরপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল এখানে পানির গতি প্রবাহ ছিল ৮ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার । জৈন্তাপুর সারি নদীর পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল । অপরদিকে সিলেটে বৃষ্টিপাত আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর । সেই সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল বন্যার ভয়াবহতা সৃষ্টি করতে পারে বলেও ধারণা আবহাওয়াবিদদের।

আবহাওয়া অধিদপ্তরসিলেটের আবহাওয়া বিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন আমাদের দেশের মধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে সেটা তেমন কিছু নয়। সমস্যা ও উজানের বৃষ্টিপাতে ভারতের মেঘালয়, মিজোরা্‌ মনিপুর এলাকায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেই সঙ্গে আমাদের দেশেও গড়ে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হচ্ছে উজান ঢল নেমে একের পর এক নদ নদীর পানি বাড়ছে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে । তিনি বলেন জুলাই মাসেই ৩৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে জুন মাসে  ৮০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সর্বশেষশুক্রবার ১২ ই জুলাই সকাল থেকে শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ১১৪ মিলিমিটার ও বিকেল তিনটা পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হলেও তা ১০০ ছাড়িয়ে যাবে। তাছাড়া অতিবৃষ্টির কারণে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে এতে নগরবাসীকে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here