সিলেট মহানগরীর প্রধান সমস্যাগুলাের মধ্যে অন্যতম ছিলো জলাবদ্ধতা। এ সমস্যা সমাধানে সাত বছরে হাতে নেওয়া হয় বিভিন্ন প্রকল্প।
গত এক সপ্তাহের দিনের টানা বর্ষণ আর উজানে ভারতের পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা ঢলে ফুলে-ফেঁপে ওঠে সুরমা। যেসব ছড়া-খাল দিয়ে নগরের পানি গিয়ে সুরমায় পড়ত, সেগুলাে দিয়েও নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায়। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার বিভিন্ন ছড়া-খাল দিয়ে উল্টো পানি ঢোকা শুরু হয় নগরীতে।
গত সােমবার বিভিন্ন স্থানে নদীর তীর উপচেও পানি প্রবেশ শুরু হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত এ অবস্থা বিদ্যমান। ফলে নগরীর ছড়ারপাড়, মাছিমপুর, কালিঘাট, তােপখানা, কাজীর বাজার, শেখঘাট, উপশহর, তেররতন, মুমিনখলা, খােজারখলা, ঝালােপাড়াসহ নদীতীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

গতকাল সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাত না হলেও উজানের ঢলের কারণে সুরমার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। নতুন করে বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। বিশেষ করে যাদের বাসা বহুতল ভবনের নিচতলায় তারা পড়েছেন মারাত্মক বিপাকে। অনেকে বাসাবাড়ি ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের বাসায় কিংবা গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন।
শাহজালাল উপশহরের বাসিন্দা ব্যাংকার মােস্তাফিজ রুমান জানান, সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সােমবার রাতে তাদের বাসায় পানি ওঠা শুরু হয়। তিনি বাসার নিচতলায় থাকেন। বধুবার তার বাসার ভেতরে দেড় ফুট পরিমাণ পানি উঠেছে। উপায়ান্তর না পেয়ে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে উঠেছেন।

নগরীর প্রায় সব কটি ড্রেন ভেঙে নতুন করে আরও গভীর ও প্রশস্ত করে তৈরি করা হয়। এরপর থেকে জলাবদ্ধতা কিছুটা কমে আসে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে সাময়িক জলাবদ্ধতা তৈরি হলেও পানি দ্রুত নেমে যেত। কিন্তু এবার টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল হিসাব-নিকাশ গুলিয়ে দিয়েছে সিটি করপােরেশনের।
২৪৫ কোটি টাকার প্রকল্প কোনাে কাজেই আসেনি জলাবদ্ধতা কিংবা বন্যা নিয়ন্ত্রণে। এ যেন সুরমার পানিতে ভাসছে শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন!