কোন দূর্ঘটনা ঘটবার পর আমরা প্রতিনিয়ত হা পিত্যেশ করতে থাকি, এর ওর দোষ দেই। কিন্তু নিজেকে একটু সচেতন করে রাখলেই এই সমস্ত অযাচিত উপদ্রপ থেকে দূরে থাকা যায় ।
ধরা যাক, ফেসবুকে আপনার সাথে একজনের পরিচয় হলো। সে নিশ্চই তার প্রোফাইল ছবি বা টাইমলাইনে নিজের অন্ধকার জগত সম্পর্কে লিখবে না, সারাক্ষণ সুন্দর সুন্দর ছবি আর কথার মালা সাজিয়ে ভরিয়ে রাখবে । আপনি ধীরে ধীরে তার প্রতি দূর্বল হতে থাকবেন, সে তখন একটা হিসেব করে ফেলবে তার পোস্টে কে কতো গুলো হার্ট ইমো দিচ্ছে।
এক শ্রেণীর পার্ভার্টেড আছে যারা ফেসবুক আইডি খোলেই শুধু শিকার ধরার জন্যে, এটা ছেলে বা মেয়ে এমন কোন লিংগিক পার্থক্য নেই। জরীপে দেখা গেছে শুধুমাত্র ফেসবুকে পরিচয়ে পরিনয় বেশি দিন টেকে নি । তার কারন একটাই , চোখের মধ্যে কালো চশমা পরিধান করে থাকা ।
আপনি দেখতেই পাচ্ছেন তার ইনফোতে কোন জব ডেস্ক্রিপশন নেই, তাকে কাজের ব্যাপারে প্রশ্ন করুন; অফিসের ঠিকানা জিজ্ঞেস করুন। সম্পর্কে জড়িয়ে যাবার আগে তার অফিস ভিজিট করুন, এখানে লজ্জা পাবার কিছু নেই। যে আপনার জীবনে আসবে তার সব কিছু আগেই জেনে নেওয়া ভালো। তার মাসিক আয় হয়তো প্রথম অবস্থায় আপনার জানার দরকার নাও হতে পারে কিন্তু বিয়ের ব্যাপারে যদি এক কদম পা বাড়ান তাহলে পাত্রের বাৎসরিক আয় / আগে কোন বিয়ে হয়েছিল কীনা এইসব জানাটা জরুরী, সেই সাথে পাত্রী সম্পর্কেও অতীত রেকর্ড জেনে নেওয়া ভালো । (বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে )
এখানে একটা বিষয় আছে , যদি আপনি পাড়ার দোকানীর কাছে এই ধরণের বিষয় জানতে চান তাহলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভুল করবেন। কারো চারিত্রিক সনদপত্র দেবার এখতিয়ার কারো নেই ; সে জন্য আপনি পাত্র /পাত্রির কলিগদের সাথে পরিচিত হতে পারেন আর যারা ঘরে বসেই কাজ করছেন তাদের সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু কমন বন্ধুর সাহায্য নিন ।
কলিগরা সাধারণত খুব কাছের বন্ধু হয় না ,কাছের বন্ধু তথ্য আড়াল করলেও কাজের সাথে যাদের সম্পর্ক তারা সঠিক তথ্যই দেন । তাদের তথ্য গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিৎ। আপনি যতোই তার ব্যাপারে ইমোশনাল বা সিরিয়াস হন না কেন সঠিক তথ্য নেওয়ার পুরো অধিকার আপনার আছে। এসব ক্ষেত্রে পুলিশ অনেক সময় দারূন সহযোগিতা করে ,তাদের কাছে মোটামোটি কিছু তথ্য থাকবেই ।
এখন ইন্টারনেটের যুগ, একটি মানুষ সম্পর্কে জানতে চাওয়া এমন কোন কঠিন কাজ নয় । মানবাধিকার সংস্থা যতই বলুক ব্যক্তিগত তথ্য বাইরে প্রকাশ করা বে-আইনী ; আমি নিজে পর্যালোচনা করে দেখেছি তথ্য লুকিয়ে সম্পর্ক করা আরো বেশী ক্ষতিকর, তখন আইন দিয়ে অপরাধিকে সাময়িক শাস্তি দেওয়া যায়; কিন্তু আপনার হারানো ক্ষতি কোন দিন ফিরিয়ে আনা যায় না ।
মনে রাখবেন, একটি সম্পর্ক কিন্তু দু’জন নর- নারীর মধ্যেই সীমাবন্ধ থাকে না, এর সাথে জড়িয়ে আছে দু’টি পরিবারের ভালোবাসা ভরা স্বপ্ন। তাদের এই স্বপ্নকে সুন্দর বাস্তবতায় রূপ দিতে পারে আপনার একটু খানি সচেতনতা।
রোদেলা নীলা গল্পকার এবং নাগরিক সাংবাদিক, ঢাকা, বাংলাদেশ।